বাংলাদেশ ডেস্ক | বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরান। প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা হামলার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) মিত্রদের সংযমের অনুরোধ উপেক্ষা করে ইরানে প্রতিশোধমূলক হামলার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে ইসরায়েল। তবে আক্রান্ত হলে শনিবারের (১৩ এপ্রিল) চেয়ে অনেক বেশি কঠোর হামলার হুমকি দিয়েছে ইরান। ড্রোন
বুধবার (১৭ এপ্রিল) জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেয়ারৎসগের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিডে ক্যামেরুন। বৈঠকে তিনি ইরানে হামলা না চালাতে অনুরোধ করেছেন। মঙ্গলবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে একই ধরনের অনুরোধ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
বুধবার জেরুজালেমে বৈঠকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলে বর্তমানে ইরানের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব বেড়েছে। এটাকে কাজে লাগান। হামলা না চালিয়ে প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাড়িয়ে ইরানকে একঘরে করতে মনোনিবেশ করুন। জিম্মিদের ফেরত আনা, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও সেখানে ত্রাণ প্রবেশের দিকে নজর দিন।
কিন্তু ক্যামেরুনের এসব কথা ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তিনি নিজেদের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন, ইরানে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। কখন এবং কী পরিসরে এ হামলা চালানো হবে, এখন সেটাই হিসাবের বিষয়।
বৈঠক শেষে জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যামেরুন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের এ মনোভাব সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, কী ঘটতে যাচ্ছে সে বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি স্পষ্ট করাটা জরুরি। ইসরায়েল হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। আমরা আশা করব, তারা এমনভাবে হামলা চালাবে, যাতে করে উত্তেজনা যথাসম্ভব কম হয়।
গার্ডিয়ান জানায়, ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার বিষয়টি ইসরায়েলের রাজনীতিবিদদের বাইরে ক্যামেরুনই প্রথম কোনো বিদেশি রাজনীতিবিদ হিসেবে জনসম্মুখে প্রকাশ করলেন।
এদিকে ইরান বা মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো স্থাপনায় ‘সামান্যতম’ হামলা চালানো হলেও ‘ব্যাপক ও কঠোর’ পাল্টা হামলার ঘোষণা বুধবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।
বুধবার তেহরানে দেশটির সামরিক বাহিনীর বার্ষিক কুচকাওয়াজে অংশ নিয়ে রাইসি এ ঘোষণা দেন। আগের দিন মঙ্গলবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে ফোনালাপেও রাইসি একই কথা বলেছিলেন।
অন্যদিকে ইসরায়েলি হামলা মোকাবিলায় লোহিত সাগরে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে ইরানের নৌ-বাহিনী। বুধবার তিনি এ কথা জানান।
আগের দিন সোমবার ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি বলেছেন, ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক হামলা চালালে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই জবাব দেওয়া হবে। এবার আমরা ১২ দিন অপেক্ষা করব না।
এর আগে সোমবার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান হারজি হালেভি ইরানে হামলার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘ইরানকে ইসরায়েলে হামলার নিশ্চিত জবাব পেতে হবে। এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন অপশনের কথা ভাবছি।’
১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) দুই জেনারেলসহ মোট সাত সদস্য নিহত হয়। প্রতিক্রিয়ায় ১২ দিন পর শনিবার রাতে ইসরায়েলের দিকে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান।
তবে ইসরায়েলের তেমন একটা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। প্রায় ৯৯ শতাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েল সীমান্তে ঢোকার আগেই ধ্বংস করার দাবি করেছে দেশটি। ইরানি হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সৌদি আরব ও জর্ডান সহায়তা করেছে বলে জানা গেছে।
সূত্র : গার্ডিয়ান, আলজাজিরা
Posted ৮:১৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh